
সিকারি ডেস্ক:: সিলেট জেলা পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবি থেকে সরে এসেছে। পূর্বঘোষিত পাঁচ দফা দাবির তালিকা থেকে এই দাবি বাদ দিয়েই শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে জেলার সর্বত্র পণ্য পরিবহন ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।
ধর্মঘটের কারণে জেলার বিভিন্ন সড়কে ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলার সব মালিক-শ্রমিক একত্রিত হয়ে যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
ছুটি ও আশুরার দিনে ধর্মঘট পালনে মতবিরোধের মাঝেই সকাল ৬টা থেকে সিলেট জেলায় চলছে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট। সকাল ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সর্বত্র সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন হতে দেখা যায়।
সিলেটের ট্রাক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৫ দফা দাবিগুলো হলো: পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়া, ক্রাশার মেশিন ধ্বংস অভিযান বন্ধ করা, পাথর পরিবহনকারী ট্রাক আটকানো বন্ধ, চালকদের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ এবং সিলেটের জেলা প্রশাসকের অপসারণ।
তবে আজকের কর্মসূচিতে দাবি নম্বর পাঁচ পরিবর্তন করে সেখানে বিআরটিএ অফিসে শ্রমিক হয়রানি বন্ধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই আন্দোলনের নেতা এবং সিলেট জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া।
তিনি জানান, সিলেট জেলার সকল মালিক-শ্রমিক এক হয়ে এই আন্দোলনে নেমেছেন। তিনি আরও জানান, দাবি আদায় না হলে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির পর সিলেট জেলার সকল গণপরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
প্রাথমিক ঘোষণায় দাবি নম্বর পাঁচে ছিল সিলেটের জেলা প্রশাসকের অপসারণ। তবে আজকের কর্মসূচিতে সেটি বাদ দিয়ে নতুনভাবে বিআরটিএ সংশ্লিষ্ট দাবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এ পরিবর্তন নিয়ে নেতারা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপের কারণেই তারা জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবিকে পাশ কাটিয়েছেন বলে অনেক পরিবহন নেতারা মনে করছেন। যদিও সিলেটের বিএনপি নেতা, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক, মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবিতে মাঠে নেমেছিলেন।
এই আন্দোলনের সময়সূচি এবং প্রেক্ষাপট নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন পাথর মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা। ইমজা নিউজকে তিনি বলেন, ‘শনিবার সরকারি ছুটি এবং রবিবার পবিত্র আশুরা, এমন দুটি দিনে কর্মবিরতি ডাকা অযৌক্তিক। আশুরা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনে ধর্মঘট বা বিক্ষোভ গ্রহণযোগ্য নয়।’
বেশ কিছু কর্মসূচি পালনের পর গত বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সেখানে এই পক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকার যদি দাবি মেনে না নেয়, তাহলে ৫ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হবে।