• ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিয়ম বহির্ভূত ক্রাশিং না করার শর্তে ধুপাগোলে আবারও সচল হলো পাথর মিল

sylhetcrimereport
প্রকাশিত এপ্রিল ২৫, ২০২৫
নিয়ম বহির্ভূত ক্রাশিং না করার শর্তে ধুপাগোলে আবারও সচল হলো পাথর মিল

নিজস্ব প্রতিবেদক:: প্রশাসনিক অভিযানে ক্রাশার মিল ভাঙ্গার সময় হামলা, মামলা, প্রতিবাদের পর প্রশাসন আর বিভিন্ন সংগঠনের বৈঠকে একাধিক নিয়মের চক সহকারে গ্রিন সিগনাল পেলো ধুপাগুলের পাথর মিল ব্যবসায়ী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে দুই ঘন্টার বৈঠকের পর চলমান এই ইস্যুর অবসান ঘঠে।

জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল সিলেটের জেলা প্রশাসন কতৃক ধুপাগুলে গড়ে উঠা পাথর মিল উচ্ছেদ অভিযানে যায়। ঐদিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৯ টি পাথর মিল ভাংচুর করা হয়। এসময় বহিরাগত কিছু পাথর মিল মালিক ও শ্রমিকরা প্রশাসনের উপর হামলা করে। ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মামলাসহ পাথর মিলগুলো উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসন শক্ত অবস্থানে যায়।

এসময় প্রশাসনের সাথে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বিরাজমান পরিস্থিতি সমাধানের লক্ষ্যে এগিয়ে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বালু, পাথর এবং পরিবহনের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. দিলোয়ার হোসেন পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সমস্যাটি নিয়ে শরণাপন্ন হন বিএনপি’র চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নিকট।

সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে তৎক্ষনাৎ সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে উচ্ছেদ অভিযান ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিতের সময় নেন।

জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করার পর ২০ এপ্রিল (রবিবার) ধুপাগুলের স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের আয়েজনে একটি প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন আরিফুল হক চৌধুরী। সেখানে তিনি যৌক্তিক আন্দোলনে পাথর সমিতি, শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিকদের পাশে থাকবেন বলে সমাবেশে বক্তব্য প্রধান করেন।

এতে আতংক থেকে আশার প্রদীপ জ্বলে ব্যবসায়ীদের। পরে মেয়রের মধ্যস্থতায় জেলা প্রশাসকের সাথে উল্লেখ্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব দলের সাথে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ, সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোশনুর রুবাইয়াং।

বৈঠক থেকে সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পাথর মিল সচল করতে একটি চক তৈরি করা দেওয়া হয়। এতে কিছু নির্দেশনা মেনে ক্রশিং করলে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশাসনিক ভাবে হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবে এমন সিদ্ধান্ত উঠে আসে।
বৈঠকে প্রশাসন থেকে জানানো হয়।

সরকারী জায়গায় কোন ক্রাশিং মিল বসানো কিংবা পাথর রাখা যাবেনা। পানি ছাড়া পাথর ভাঙ্গতে পারবেন না। ক্রাশিং মিলে চোরাই পাথর রাখা ভাঙ্গা নিষিদ্ধ। কোথাও পাওয়া গেলে পাথরগুলো প্রশাসন কর্তৃক জব্দ করা হবে। এবং পরিবেশ নষ্ট না করার আহ্বান রেখে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ বরাবর আবেদন পত্র জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠকে জানানো হয় কেউ যাতে কোনো ধরনের অবৈধ কাজ করেত না পারে সে দিকে স্টোন ক্রাশার ও পাথর বালু ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি মনিটরিং করা কথা বলা হয়।

এদিকে হামলা নিয়ে মামলার বিষয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা জানো হয়। তবে মামলায় কোনো নিরীহ ও নির্দোষ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রেখে কাজ করার কথাও উঠে আসে।

এ সময় অন্যান্নদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ট্রাক পিকাপ কাভার ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি দিলু মিয়া, কার্যকরী সভাপতি, আব্দুল সালাম, সিলেট জেলা ট্রাক কাভার ভ্যান মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি নাজির আহমদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ খান সাদেক, ব্যবসায়ী নেতা ও সিলেট সদর উপজেলা বিএনপি’র নির্বাহী সদস্য মামুন আল রশিদ হেলাল, স্টোন ক্রাশার ব্যবসায়ী ও খাদিম নগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ সভাপতি সৈয়দ ছালেহ আহমদ শাহনাজ, স্টোন ক্রাশার ব্যবসায়ী ও খাদিমনগর ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামি নেতা জয়নুল হক, ব্যবসায়ী নেতা ও সিলেট জেলা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক,আবু সাঈদ শাহীন, এয়ারপোর্ট থানা শ্রমিক দলের আহবায়ক আব্দুল মুমিন, ব্যবসায়ী নেতা ও সিলেট জেলা যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক, সিলেট সদর পাথর বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মন্তাজ আলী, সাধারণ সম্পাদক মুজাম্মেল আলম সাদ্দাম, কোষাধ্যক্ষ আজাদ মিয়া, সিলেট সদর পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মুহিবুর রহমান সুলেমান, সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক, ভোলাগঞ্জ ষ্টোন ক্রাশার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বাবুল।