
নিজস্ব প্রতিবেদক:: পরিবহন ধর্মঘটে কয়েকদিন ধরে অচল হয়ে পড়া সিলেটের জনজীবনে অবশেষে ফিরেছে স্বস্তি। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে রুদ্ধশ্বাস বৈঠকের পর দু’দিনের জন্য ধর্মঘট স্থগিত ঘোষণা করেছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও পাথর ব্যবসায়ী নেতারা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। বিভাগের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী পরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর আশ্বাস দেন, তাদের দাবি-দাওয়াগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে এবং দুইদিন পর আবার একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিক ও মালিকপক্ষ পরবর্তী দুইদিনের জন্য ধর্মঘট স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়।
শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল:
যানবাহনের ‘ইকোনমিক লাইফ’ ১৫-২০ বছর নির্ধারণের সরকারি প্রজ্ঞাপন বাতিল
বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারি ও বালু মহাল খুলে দেওয়া
বিআরটিএর ফিটনেস সনদে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাতিল
গণপরিবহনের ওপর অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রত্যাহার
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়া ক্রাশার মিলগুলোর সংযোগ পুনঃস্থাপন ও ক্ষতিপূরণ
পণ্যবাহী গাড়ির পাথর ও বালু জব্দের ক্ষতিপূরণ
জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদের প্রত্যাহার
চালকদের হয়রানি বন্ধ
বিভাগীয় কমিশনার বলেন,
> “মানুষের জন্যই আইন, মানুষের জন্যই সরকার। আমরা সিলেটবাসীর কল্যাণে সবটুকু করবো। সারাদেশে যদি পাথর উত্তোলন হয়, তাহলে সিলেটেই বা নয় কেন?”
তিনি আশ্বস্ত করেন, সব সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে প্রয়োজন হলে উচ্চ আদালতের সহায়তাও নেওয়া হবে।
এদিকে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস- কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন,
> “দু’দিনের জন্য আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। কমিশনার সাহেব আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। আলোচনা করে পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন ও পাথর ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম এবং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
এই সিদ্ধান্তে সিলেটের জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য পরবর্তী বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছেন সবাই।