
সিকারি ডেস্ক:: দীর্ঘদিন পর সিলেটি নারী ড. জুবাইদা রহমান দেশে আগমনী রাজনৈতিক নতুন বার্তা হিসাবে দেখছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তিনি রাজনীতিতে আসছেন, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের এমন প্রত্যাশার বাস্তবায়ন এখন সময়ের অপেক্ষায়। ১৭ বছর পর শাশুড়ি ও দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন তিনি। তাকে ঘিরে নতুন ঐক্যের সম্ভাবনাও দেখছে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী হিসেবে বেশি আলোচিত হলেও পেশায় চিকিৎসক জুবাইদা রহমানের পরিবারের সাথে এই দেশের জন্মের সুতো খুব নিবিড়ভাবে বাঁধা।
সিলেটের কৃতিসন্তান নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলীর কন্যা ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনয়াক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর ভাতিজি।
রাজনীতিতে ডা. জুবাইদা রহমানের অংশগ্রহণ শুধু জাতীয় পর্যায়েই নয়, সিলেট বিএনপির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিরসনেও বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে অনেক যোগ/বিয়োগের হিসাবও কষতে হতে পারে নতুন করে।
সিলেট বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বহুদিনের। এক সময় মরহুম অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও এম. ইলিয়াস আলীর মধ্যে মতবিরোধ চরমে পৌঁছায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছিল যে, সাইফুর রহমান রাজনীতি ছাড়ার হুমকি দেন। পরে খালেদা জিয়ার মধ্যস্থতায় ইলিয়াসপন্থীরা তাঁর কাছে ক্ষমা চান।
সাইফুর রহমানের মৃত্যুর ১৬ বছর এবং ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ১৩ বছর পরও সিলেট বিএনপিতে বিভাজন কাটেনি। বর্তমানে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত—সাইফুরপন্থী আরিফুল হক চৌধুরী এবং ইলিয়াসপন্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীরের অনুসারীদের মধ্যে। দুজনেই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
আরিফুল হক চৌধুরী জনগণের চাহিদা থাকলে প্রয়াত সাইফুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে, খন্দকার মুক্তাদীর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হলেও দলের প্রতি অনুগত থেকেছেন এবং এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এই প্রেক্ষাপটে, ডা. জুবায়দা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হলে দলীয় বিভাজন নিরসন এবং নেতৃত্বে নতুন গতির সঞ্চার ঘটাতে পারেন। তাঁকে ঘিরে সিলেট বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।
বিএনপি কেন্দ্রিয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকি বলেন, জুবাইদা আপা আমাদের সিলেটের তথা দেশের গর্ব। সিলেটের রাজনীতিতে নেতৃত্ব শূণ্যতা রয়েছে যদি জুবায়দা আপা রাজনীতিতে আসেন তা পূরণ হবে। সেই সাথে মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে তিনি ভূমিকা রাখতে পারবেন। তাই আমরা আপাকে রাজনীতিতে আসার অনুরোধ জানাবো।
জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের মহানগর কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির শাহীন বলেন, উনার মতো মেধাবী চিকিৎসককে নেতা হিসেবে পেলে সিলেটবাসী ধন্য হবে।
মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, ফেসিস্ট সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন দেশের মেধাবী এই চিকিৎসক। তার প্রত্যাবর্তনে সিলেটবাসী খুশি। আমি আশাবাদী তার নেতৃত্বে এই দেশের শিক্ষা স্বাস্থ্যখাত সহ দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গন আলোকিত হবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বদর বলেন, উনি পারিবারিকভাবে চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের সহযোগি শক্তি হিসেবে রাজনৈতিক চিন্তাচেতনায় অগ্রসর ব্যক্তি। পারিবারিকভাবে তার রক্তে সিলেট তথা দেশের তরে কাজ করার স্পৃহা বহমান। তিনি রাজনীতিতে অংশ নিবেন বলে সিলেট তথা দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে।
মহানগর বিএনপির সহকৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজীব কুমার দে রাজু বলেন, সিলেটবাসীর অহংকার মেধাবী এই চিকিৎসক যদি রাজনীতিতে আসেন তাহলে সিলেট বিএনপির গুমোট রাজনীতির পরিবেশ কাটিয়ে আশার বৃষ্টি হয়ে নামবেন আমাদের বোন জুবায়দা রহমান।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দিনার আহমদ বলেন তিনি রাজনীতিতে এলে দেশের উন্নয়ন হবে।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য অ্যাডভোকেট আসলাম বলেন, ডা. জুবাইদা আমাদের অহংকার। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হলে দলের জনপ্রিয়তাও বাড়বে। আমরা পাবো এক নতুন বাংলাদেশ। রাজনীতিতে আসলে এটা হবে দেশের জনগণের জন্য এক গুড ম্যাসেজ। সিলেটের মানুষ উনার কাছে অনেক প্রত্যাশা করেন।