
সিকারি ডেস্ক:: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে প্রেমিকের হাতে ভয়ঙ্কর পরিণতির শিকার হয়েছেন এক কিশোরী (১৬)। প্রেমের সম্পর্কের আড়ালে নিষ্ঠুর নির্মমতা—ধর্ষণের পর বেধড়ক মারধর করে গাড়িতে তুলে নদীর পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় প্রেমিক।
বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের সমধল গাঙ্গপাড় এলাকা থেকে ওই কিশোরীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ঘটনার পর রাতেই পালিয়ে যাওয়া প্রেমিক জাবেদ মিয়া (৩২) কে আটক করে পুলিশ। সে জগন্নাথপুর পৌরসভার ইকড়ছই (আমবাড়ি) গ্রামের আফসর উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর সঙ্গে জাবেদের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। বুধবার দুপুরে ওই কিশোরী জাবেদকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে জাবেদ তাকে ধর্ষণ করে এবং পরে নিজের বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের সমধল গাঙ্গপাড় এলাকায় গাড়িতে করে এনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল মিয়া বলেন, “ওই কিশোরীকে গুরুতর আহত অবস্থায় সমধল গাঙ্গপাড়ে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। বিষয়টি আমাদের জানালে আমরা থানায় খবর দিই। পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সৃজনা সরকার তমা বলেন, “মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মারধরের আগে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মেয়েটি আমাদের জানায়। তবে তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঞা বলেন, “দুজনেই মাদকসেবী। তারা একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করত। ঘটনার পর মেয়েটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং জাবেদকে আটক করা হয়েছে।”
নদীর পাড়ে পড়ে থাকা একটি কিশোরী—যার শরীরে আঘাতের দাগ, চোখে ভয়, মুখে কোনো শব্দ নেই—সে যেন গোটা সমাজের কাছে প্রশ্ন রেখে গেছে:
ভালোবাসা কি এতোই হিংস্র, এতোই বিশ্বাসঘাতক?