• ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিশুদের বিব্রতকর প্রশ্নের জবাব যেভাবে দেবেন

sylhetcrimereport
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২৪
শিশুদের বিব্রতকর প্রশ্নের জবাব যেভাবে দেবেন

ছবি: সংগৃহীত

সুফিয়া রহমান একজন গর্ভবতী নারী। তাঁর গর্ভধারণের সাত মাস চলছে। ফলে তাঁর শরীরের পরিবর্তনগুলো দৃশ্যমান। সুফিয়া রহমানের পাঁচ বছর বয়সী একটি সন্তান আছে।

সন্তান তার মায়ের অস্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে প্রায়ই জানতে চায়।মা যখন তাকে বলল, তোমার একজন ভাই বা বোন হবে। তখন সে বলল, ভাই-বোন কিভাবে হয়? তোমার পেট এত বড় হলো কিভাবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রশ্ন হলো, এমন বিব্রতকর প্রশ্নের উত্তরে মা-বাবা কী বলবে? সুফিয়া রহমান চান এমনভাবে উত্তর দিতে, যেন তার উত্তর মিথ্যাও না হয় এবং শিশুসন্তানের কাছ থেকে সত্যও আড়াল করা যায়।

প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, সন্তানের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য তাদের প্রশ্নাবলি গুরুত্বের সঙ্গে শোনা এবং বুঝেশুনে তার উত্তর দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কেননা এটা শিশুর জ্ঞানের ভিত্তি তৈরি করে। কোনো সন্দেহ নেই শিশুদের সামনে সব কিছু প্রকাশ করা উচিত নয়। এতে তাদের মনমানসিকতা বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। আবার শিশুদের প্রশ্নগুলো উপেক্ষা করাও উচিত নয়।

কেননা এতে তারা হীনম্মন্যতার শিকার হতে পারে। মা-বাবার করণীয় হলো, স্নেহ ও মমতা বজায় রেখে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উত্তর দেওয়া।যথাসম্ভব শিশুর সঙ্গে সত্য বলা, কোনো প্রকার প্রতারণা না করা। শিশুর সঙ্গে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিলে শিশুর ভেতর অপরাধপ্রবণতা বাড়তে পারে। উল্লিখিত বিষয়ে শিশুসন্তানকে মা-বাবা সরাসরি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যেতে পারেন।

তাঁরা মানুষ কিভাবে গর্ভধারণ করে এবং কিভাবে তার জন্ম হয়, সে উত্তর না দিয়ে বলতে পারেন—মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি এবং তিনি অসীম কুদরতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন।আল্লাহ কিভাবে মাটি থেকে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন, কিভাবে তিনি মৃতকে জীবিত এবং জীবিতকে মৃত করেন তা বর্ণনা করা। বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করা যেন শিশু বুঝতে পারে পৃথিবীতে মানুষের আগমন ও মৃত্যু কোনো উপায়-উপকরণের ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং তা পুরোপুরি আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।

এরপর শিশুকে বোঝাতে হবে মা-বাবাকে কেন প্রয়োজন। তাকে বলতে হবে, আল্লাহ মানবশিশুর পরিচর্যা ও প্রতিপালনের দায়িত্ব মা-বাবার ওপর দিয়েছেন। পৃথিবীর অনেক পশুপাখির বাচ্চাদের মতো মানবশিশুরা অযত্ন ও অবহেলায় মৃত্যুবরণ না করে। মা-বাবা না থাকলে শিশুদের অযত্ন হতো। তারা লেখাপড়া করে আদর্শ মানুষ হতে পারত না। তাদের অনেকেই ঘরহীন, আশ্রয়হীন হয়ে জীবন কাটাত। পশুপাখির জীবন যেমন বিপদ ও অনিশ্চয়তায় ভরপুর, তাদের স্থায়ী কোনো আবাস বা ঠিকানা নেই।

এভাবে শিশুসন্তানকে উত্তর দিলে তারা একদিকে যেমন সন্তুষ্ট হবে, অন্যদিকে কথাগুলো মিথ্যা হবে না। আবার স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব হবে। উপরন্তু শিশুটি আল্লাহর কুদরত ও ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত হবে। তার অন্তরে ঈমানের ভিত দৃঢ় হবে। সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে, তাঁদেরকে গুরুত্ব দিতে শিখবে। এমন প্রশ্নের উত্তরে শিশুদের ঈসা (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করা যায়। তিনি আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন হিসেবে মায়ের কোলে আগমন করেন এবং নবজাতক হিসেবে কথা বলেন। ঈসা (আ.) শৈশবে নিজের ঈমান ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা দেন। ইত্যাদি।

আল্লাহ সব শিশুর জীবন সুন্দর করে দিন। আমিন।

সিলেট ক্রাইম রিপোর্ট/এস.এ