• ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পাথরলুটের কমিশন পেতেন ডি সি-এস পি

sylhetcrimereport
প্রকাশিত আগস্ট ২৪, ২০২৫
পাথরলুটের কমিশন পেতেন ডি সি-এস পি

সংগৃহিত

সিকারি ডেস্ক::  দেশজুড়ে আলোচিত সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর উত্তোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধনে স্থানীয় প্রশাসনের অসাধু যোগসাজশ ছিল বলে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কার পকেটে কত টাকা যেত, কীভাবে টাকা আদায় করা হতো, এর সবকিছুই খোলাসা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সরেজমিন পরিদর্শন, অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, পাথরলুটকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪২ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ (ব্যবসায়ী) জড়িত রয়েছেন। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি হয়েও বিভাগীয় কমিশনার বক্তব্য দিয়ে লুটপাটে উৎসাহ যুগিয়েছেন বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

এমনকি উত্তোলিত পাথর বাণিজ্যের কমিশন বাবদ প্রশাসনের (তহশিলদার, এসি-ল্যান্ড, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য) জন্য প্রতি ট্রাক হতে ৫ হাজার টাকা এবং প্রত্যেক বারকি নৌকা হতে ৫০০ টাকা দেওয়া হতো বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এতে।

সাদাপাথর লুটপাট নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে গত ১৩ আগস্ট সেখানে সরেজমিন তদন্তে যায় দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল।

এর নেতৃত্বে ছিলেন দুদকের সিলেটের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাফী মো. নাজমুস্ সাদাৎ

তিনি বলেন, ‘সাদাপাথর সরেজমিন তদন্ত করে গত ১৭ আগস্ট আমরা দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।

অনুমতি পেলে সার্বিক বিষয়ে তদন্তে নামবো। ’

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিজিবির টহল চলমান থাকলেও পর্যটন স্পট থেকে বিগত কয়েক মাসে শত কোটি টাকার পাথর লুটপাট হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের ইন্ধন ও সরাসরি সম্পৃক্ততায় এ ধরনের কার্যকলাপ চলেছে প্রকাশ্যে।

পাথর আত্মসাৎ প্রক্রিয়াটি স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহের নিষ্ক্রিয়তা ও যোগসাজশে সংঘটিত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে দুদকের কাছে। তারা প্রতিবেদনে বলেছে, নদী ও পর্যটন এলাকা থেকে পাথর চুরি করে প্রথমে স্থানীয় স্টোন ক্রাশার মেশিন কারখানাসমূহে জমা করা হয় ও পরে ভাঙ্গা হয়, যাতে চুরিকৃত পাথরের অস্তিত্ব না পাওয়া যায়।

পাথর কোয়ারিসমূহে পাথর উত্তোলনের অনুমতি না থাকলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন সরকারের পতনের পর থেকে বিশেষ করে বিগত ৩ মাস যাবৎ পাথর উত্তোলন চলতে থাকে। সংরক্ষিত পরিবেশ এলাকা সত্ত্বেও সাদাপাথর এলাকা থেকে সর্বশেষ ১৫ দিন পূর্ব থেকে নির্বিচারে পাথর উত্তোলন ও আত্মসাৎ হয়েছে, যাতে প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর তুলে ফেলা হয়েছে। ফলে এলাকাটি বর্তমানে অসংখ্য গর্ত ও বালুচরে পরিণত হয়েছে মর্মে দেখতে পায় দুদকের টিম।

সাদাপাথর লুটে নেপথ্যে পুলিশ:

প্রতিবেদনে বরা হয়েছে, আদায়কৃত অর্থ কোম্পানিগঞ্জ থানার অধীন ছয়টি বিট অফিসে কর্মরত এসআই ও এএসআইকে দেওয়া হতো। ছয়টি বিট অফিসের কর্মকর্তারা আদায়কৃত অর্থ কোম্পানিগঞ্জ থানার ওসিসহ এএসপি সার্কেল ও এসপিকে দিতেন। এছাড়া সিলেট ডিবি পুলিশের ওসিকেও ওই টাকার ভাগ দিতে হতো।

প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে পুলিশের সিলেট পিআইও শাখার দুইজনের নাম উঠে এসেছে, যারা অবৈধ পাথর উত্তোলন সিন্ডিকেটে জড়িত মর্মে জানতে পারে দুদক। তাদের একজন হচ্ছেন এসআই বানাকান্ত ও আরেকজন কনস্টেবল দেলোয়ার। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানার সম্পূর্ণ সেটআপ এই ক্ষেত্রে জড়িত। দুই থানার মধ্যে বদলি হয়ে বছরের পর বছর কিছু পুলিশ কর্মচারী ওই ঘটনাগুলো সংঘটিত করে যাচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনকে টাকা প্রদান করা হয় যেন ট্রাক না আটকানো, অভিযান না চালানো এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে বাধা প্রদান না করা হয়।

বিজিবির নিষ্ক্রিয়তা:

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদাপাথর এলাকায় ৩৩টি বিজিবি ক্যাম্প/পোস্ট রয়েছে। এগুলো হতে ঘটনাস্থলের (সাদাপাথর) দূরত্ব ৫০০ মিটার থেকেও কম। উত্তোলিত পাথর পরিবহনের নৌকাপ্রতি ৫০০ টাকা নিতেন বিজিবির সদস্যরা। পরে পাথর উত্তোলনে নৌকাগুলোকে প্রবেশের অনুমতি দিতেন। এ কারণে পাথর উত্তোলনের সময় কোনোরূপ বাধা দেয়নি বিজিবি। অনুসন্ধানকালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করা যাবে।

খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর দায়:

দুদক বলছে, খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন অনুযায়ী খনিজ সম্পদ উত্তোলন/আহরণ করলে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শনপূর্বক স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় উত্তোলিত খনিজ সম্পদ আটক/জব্দ, উন্মুক্ত নিলামে বিক্রয় ও সংশ্লিষ্ট কোডে জমা প্রদান, অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে শনাক্তকরণপূর্বক স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিতকরণ এবং উক্তরূপ কাজে লিপ্ত ব্যক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা/এখতিয়ার বিএমডির ওপর ন্যস্ত। তথাপি ওই সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনা প্রতিরোধে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি মর্মে অভিযানকালে প্রতীয়মান হয়।

বিভাগীয় কমিশনারের বক্তব্যে লুটের উৎসাহ:

বিভাগীয় কমিশনারের ভূমিকা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি নির্দেশে ২০২০ সাল থেকে সাদাপাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ রয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী গত ৮ জুলাই তার কার্যালয়ে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ‘সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে, সিলেটে যাবে না কেন? এর সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িত’। তার এ বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে সাদাপাথর লুটপাটের ক্ষেত্রে ব্যাপক উৎসাহ যোগায়। সরকারিভাবে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও তিনি উক্তরূপ বক্তব্যের মাধ্যমে পাথর লুটপাটকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের অবৈধ স্বার্থরক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন।

ব্যর্থ কেন জেলা প্রশাসক:

পাথরলুট কাণ্ডে তোলপাড় হলে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তার ভূমিকা প্রসঙ্গে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসকের সদিচ্ছার অভাব, অবহেলা, ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা অভিযানকালে প্রতীয়মান হয়েছে। তিনি তার অধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে সাদাপাথর পর্যটন স্পট রক্ষায় সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সাদাপাথর পর্যটন স্পটের বর্তমান অবস্থা একদিনে হয়নি। এটি বিগত ৭/৮ মাস যাবত চললেও জেলা প্রশাসক ও তার অধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। অথচ সরকারি বিধি অনুযায়ী সিলেট জেলায় অবস্থিত পর্যটন স্পটগুলোর নান্দনিক সৌন্দর্য বজায় রাখাসহ পরিবেশ সংরক্ষণে যথাযথ কার্যক্রম জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব।

লুটপাটে কার্যত ব্যবস্থা নেননি ইউএনওরা:

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে কোয়ারিতে বিশেষ করে সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের গোচরেই পাথর লুটপাট হয়েছে। কোম্পানিগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আজিজুন্নাহার এখানে গত ১৪ জানুয়ারি থেকে দায়িত্বে ছিলেন। তার পূর্ববর্তী ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হতে ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মোহাম্মদ আবুল হাছনাত, উর্মি রায় (২৪/১২/২৪ হতে ৩০/১২/২৪), আবিদা সুলতানা (১১/০৭/২৪ হতে ২৪/১২/২৪) কর্মরত ছিলেন। এই ইউএনওরা নামমাত্র ও লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া পাথরলুট বন্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেননি। অভিযানকালে পর্যটন স্পটে উপস্থিত দর্শনার্থী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর বাণিজ্যের কমিশন বাবদ প্রশাসনের (তহশিলদার, এসি-ল্যান্ড, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য) জন্য প্রতি ট্রাক হতে ৫ হাজার টাকা এবং প্রত্যেক বারকি নৌকা হতে ৫০০ টাকা প্রদান করা হয়।

কমিশন পেতেন জেলা প্রশাসকও

দুদক বলছে, সিভিল প্রশাসনের ক্ষেত্রে ওই কমিশনের ভাগ উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনে বণ্টন হয়ে থাকে মর্মে অভিযানকালে জানা যায়। সিভিল প্রশাসনকে টাকা দেওয়া হয়, যেন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা না করে বা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কাজে বাধা দেওয়া না হয়। সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দিষ্ট সোর্স/কর্মচারীর মাধ্যমে এ অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

নির্দেশ ছিল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার, ব্যবস্থা নেননি পুলিশ সুপার:

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। কিন্তু সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সাদাপাথর লুটপাটে কোনো ব্যবস্থা নেননি। পুলিশ সুপারের নিষ্ক্রিয়তা ও যোগসাজশের কারণে দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সাদাপাথর লুটপাট করা সম্ভব হয়েছে।

ওসিও নিতেন কমিশন:

প্রতিবেদনে দুদক বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সরকারি সম্পদ অবৈধ দখল ও লুটপাট রোধের দায়িত্ব থানা পুলিশ তথা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) ওপর বর্তায়। ওই সময়ে কোম্পানিগঞ্জ থানায় ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনানসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বিভিন্ন অঙ্কের কমিশন নিতেন। যে কারণে সাদাপাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন মর্মে অভিযানকালে জানতে পারে দুদক।

ডিসি-এসপির পকেটে যেত লুটের কমিশন:

দুদকের প্রতিবেদন অনুসারে, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর প্রতি ট্রাকে প্রায় ৫শ’ ঘনফুট করে লোড করা হতো। পরিবহন ভাড়া ব্যতীত প্রতি ট্রাকের পাথরের দাম ধরা হতো ৫০০-১৮২= ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রতি ট্রাক হতে ১০ হাজার টাকা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য আলাদা করা হতো। বাকি ৮১ হাজার টাকা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীরা নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নিতেন। প্রতি ট্রাক হতে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশের (ওসি, সার্কেল এএসপি, এসপি ও অন্যান্য) জন্য ৫ হাজার টাকা এবং প্রশাসনের (তহশিলদার, এসি-ল্যান্ড, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য) জন্য ৫ হাজার টাকা নেওয়া হতো।

এছাড়া অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকাজে ব্যবহৃত প্রতিটি বারকি নৌকা হতে ১ হাজার টাকা উত্তোলন করা হতো। তন্মধ্যে পুলিশ বিভাগ পেত ৫০০ টাকা এবং প্রশাসন (ডিসি ও ইউএনও) পেত ৫০০ টাকা। পুলিশ নির্দিষ্ট সোর্সের মাধ্যমে প্রত্যেক ট্রাক ও নৌকা হতে এসব চাঁদা/অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করতো।

প্রভাবশালী যারা জড়িত:

দুদকের প্রতিবেদনে পাথর লুটকাণ্ডে ৫০ জন প্রভাবশালী এবং দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় উঠে আসা রাজনীতিক (ব্যবসায়ী) ৪২ জনের মধ্যে বিএনপির ২০, আওয়ামী লীগের ৭ এবং জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির দুজন করে নেতার নাম রয়েছে।

তালিকায় বিএনপির ২০ নেতা:

দুদকের তালিকায় বিএনপির যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, সদস্য হাজী কামাল (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু (পাথর ব্যবসায়ী), সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাহার (পাথর ব্যবসায়ী), সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুসতাকিন আহমদ ফরহাদ (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া ওরফে দুলা, যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন, সাজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কর্মী জাকির হোসেন, সদস্য মোজাফর আলী, মানিক মিয়া, সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরাণ, জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ (বহিষ্কৃত) শাহ আলম ওরফে স্বপন, সিলেট জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম এবং গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বকস।

আওয়ামী লীগের ৭ জন:

পাথরলুটের তালিকায় নাম আছে ক্ষমতাচ্যুত ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী বিলাল মিয়া (পাথর ব্যবসায়ী), শাহাবুদ্দিন (পাথর ব্যবসায়ী), গিয়াস উদ্দিন (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু, কর্মী মনির মিয়া, হাবিল মিয়া ও সাইদুর রহমানেরও।

জামায়াত ও এনসিপির যারা:প্রতিবেদনে পাথরলুটকাণ্ডে জড়িত হিসেবে সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. ফখরুল ইসলাম ও সিলেট জেলার সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন; সিলেট জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

জড়িত আরও যারা:

এছাড়া প্রতিবেদনে ভোলাগঞ্জের আনর আলী, আরজান মিয়া, জাকির, স্থানীয় কলাবাড়ীর উসমান খাঁ ও ইকবাল হোসেন আরিফ ও দেলোয়ার হোসেন জীবন, বর্ণির আলী আকবর, গওখালের পাড়ের আলী আব্বাস, বুড়ুদেও গ্রামের মো. জুয়েল, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম এবং সিলেট নগরের মিরবক্সটুলার জামেয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়া মাদরাসার শিক্ষক মুকাররিম আহমেদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে কয়েক হাজার শ্রমিক দ্বারা অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ সাদাপাথর লুটপাট করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।