সিকারি ডেস্ক::   সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে স্থাপিত প্রেস ঢাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএমসিসিআই) ও সিলেট অ্যাপার্টমেন্টে এন্ড রিয়েল এস্টেট গ্রুপ (সারেগ)।

বৃহস্পতিবার  এসএমসিসিআই ও সারেগ এর পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট বিভাগ ও জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার, সিলেট বিভাগ এর কাছে পৃথক দুইটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট বিভাগ এর পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহন করেন উম্মে সালিক রুমাইয়া, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সংস্থাপন শাখা এবং জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার, সিলেট বিভাগ এর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সোনিয়া সুলতানা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও সারেগ এর সভাপতি খায়রুল হোসেন, এসএমসিসিআই এর ১ম সহ-সভাপতি মো: ফেরদৌস আলম, সহ-সভাপতি আলুমুছ ছাদাত চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ মো: জহির হোসেন, সারেগ এর সাধারণ সম্পাদক ও এসএমসিসিআই এর পরিচালক দিলওয়ার হোসেন, এসএমসিসিআই এর সদস্য ও ট্র্যাভেল এন্ড ট্যুরিজম উপ কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সাহেদ আহমদ।

সারেগ এর কোষাধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম হাসান, শাহজাহান কবির ডালিম প্রমুখ। স্মারকলিপিতে বলা হয় সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে ১৯৮৭-৮৮ সাল থেকে কার্যকরভাবে ভূমি রেকর্ড প্রক্রিয়া চালু হয় এবং এই  প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জনসাধারণের দূর্ভোগ ও হয়রানি কমাতে ২০১২ সাল থেকে সিলেটে “প্রেস” কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে এবং বর্তমান সময় পর্যন্ত অত্যান্ত সফল ও দ্রুততার সহিত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রেস স্থানীয় ভূমি সংক্রান্ত কাজের গতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও জনসাধারণের ভোগান্তি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সিলেট বিভাগের আওতাধীন ৩৬টি উপজেলার জরিপ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৫হাজার ৪শত ৫৭ টি মৌজার মধ্যে অধিকাংশ মৌজার গেজেট প্রকাশ প্রক্রিয়াধীন। অসমাপ্ত মৌজার মধ্যে সিলেট মিউনিসিপালিটি, সদর ও জগন্নাথপুর, গোলাপগঞ্জসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপজেলার জরিপ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে।সম্প্রতি উক্ত প্রেস কার্যক্রম ঢাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে, যা সিলেট অঞ্চলের সাধারণ জনগণ, ভূমি মালিক ও কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও অসুবিধাজনক।

এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে,ভূমি সংক্রান্ত জরুরি নথিপত্র ও খতিয়ানের কাজ মারাত্মকভাবে বিলম্বিত হবে, জনসাধারণকে বারবার ঢাকা যেতে হবে, যা সময় ও অর্থের অপচয় ঘটাবে,সিলেটের দীর্ঘস্থায়ী ভূমি সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান বাধাগ্রস্ত হবে। সিলেটবাসীর দূর্ভোগ, ভোগান্তী ও হয়রানী বৃদ্ধি পাবে। অসমাপ্ত মৌজাগুলোর জরিপ কাজ বিলম্তিত হবে এবং দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হবে। প্রেস কার্যক্রম সিলেট হওয়ার ফলে সিলেটের জনগণ অতি দ্রুত প্রিন্ট পরচা পেয়ে যাচ্ছে। প্রেস কার্যক্রম ঢাকায় স্থান্তরিত হলে আগের মতো প্রিন্ট পরচা পেতে কয়েক বছর লেগে যাবে।ফলে ভূমির মালিকানায় জটিলতা আরো বাড়বে এবং জমি কেনাবেচায়ও জনগন চরম ভোগান্তির সম্মূখীন হবে।

ইতিমধ্যে ২০২১ সালে একবার প্রেস স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। সিলেটবাসীর তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়ার ফলে থেমে যায়। একটি মহল তাঁদের নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এবং সিলেটের মানুষকে হয়রানী করে ফায়দা লোটার জন্য দীর্ঘদিন থেকে ঢাকায় প্রেস স্থান্তরের চেষ্টা করছে। সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে স্থাপিত “প্রেস” ঢাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে সিলেটের শান্তি প্রিয় মানুষ খুবই সংকিত, সংক্ষুব্ধ ও আতংকিত। তাই ১. সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে “প্রেস” পুনরায় চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।২. ঢাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। ৩. সিলেটে ভূমি ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ও জনবান্ধব সেবা নিশ্চিতে স্থানীয়ভাবে সব ধরনের সেবা বজায় রাখা।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এসএমসিসিআই ও সারেগ এর পক্ষ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়।