
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অবৈধ যান ট্রলি, ট্রাক্টর ও লরির বেপরোয়া চলাচল বেড়েছে। বিশেষ করে পৌরশহরে বেপরোয়া গতিতে চলা এসব যানবাহনের শব্দ দূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সড়কে দিনদিন বাড়ছে এই অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা। এ কারণে শহরে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটছে। এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দ্রæতগতিতে ট্রলি, ট্রাক্টর ও লরি গাড়ি চলাচল করছে। এছাড়াও পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে এই যানবাহন চলছে। ট্রাক্টর কৃষি কাজে ব্যবহৃত হওয়ার কথা থাকলেও, মালামাল আনা-নেওয়ার কাজে এখন বেশি ব্যবহার হচ্ছে এই যানবাহন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়ক জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ সকল সড়কে দৌরাত্ম্য বেড়েছে ট্রলি, ট্রাক্টরসহ অবৈধ যানবাহনের। এমনকি বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠানের যাতায়াত সড়কেও বিকট শব্দের যানবাহনগুলো বেপরোয়া গতি নিয়ে চলাছল করছে।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, শহরের মহাসড়কের পাশাপাশি বিকট শব্দের এসব যানবাহন ছোট ও সরু সড়ক দিয়ে চলাচলকালে ভয়ে থাকেন পথচারিরা। কারণ কখন ধাক্কা কিংবা শরীরের ওপরে উঠে যায়, এ শঙ্কায় থাকেন সকলে। গেল বছর উপজেলার আলাগদি গ্রামে ট্রলি উল্টে ঘটনাস্থলে সুহেল নামের এক চালকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
উপজেলা সদরের কবির মিয়া বলেন, ট্রাক্টর, ট্রলি ও লরি এই যানবাহন খুবই ভয়ংকর। চলা দেখলেই ভয় লাগে, একবার তো ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সদরের ডাকবাংলোর ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পারাপারের সময় হঠাৎ বেপোরো গতিতে একটি ট্রলি সেতুর ওপর ওঠে আমার দিকেই চলে আসছিল। তখন সেতুর রেলিং ধরে নিজেকে রক্ষা করি। এমন ঘটনায় প্রায়ই ঘটছে বলে জানান তিনি।
রুহেল আহমদ বলেন, বিপদজনক এসব গাড়িতে বিভিন্ন মালামালের পাশাপাশি মাটি পরিবহন করা হয়। পরিবহনকালে সেখান থেকে মাটি পড়ে রাস্তায় বেহাল অবস্থা হয়। একটু বৃষ্টি এলেই সড়কগুলো পিচ্ছিল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে ঘটছে দুর্ঘটনা।
জগন্নাথপুরের সামাজিক সংগঠন ফেয়ার ফেইস’র শামীম আহমদ বললেন, পৌর শহরসহ জগন্নাথপুরের সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রলি, ট্রাক্টর, ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইক, অটোরিকশা, তিন চাকার মিশুক ও অটোভ্যান। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রæত এসব অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রলি চালক জানান, আমরা গরিব মানুষ, গাড়ি চালিয়ে সংসারের খরচ যোগাতে হয়। বেপরোয়া গতিতে আমরা গাড়ি চালাই না, এটি বন্ধ করে দিলে আমরা বেকার হয়ে যাবো।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ্ বলেন, অবৈধ যানের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। সম্প্রতিকালে আমরা কয়েকজন চালককে জরিমানা করেছি। প্রয়োজনে অভিযান আরো জোরদার করা হবে।