
সিকারি ডেস্ক:: সিলেটের বিয়ানীবাজারে পিতৃত্ব শনাক্ত করতে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হলো দুইদিন বয়সে মারা যাওয়া এক নবজাতকের মরদেহ। দাফনের দুই মাস পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে এই লাশ উত্তোলন করা হয়।
সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজীব হোসাইন সজীবের উপস্থিতিতে এবং বিয়ানীবাজার ও জুড়ী থানা পুলিশের সহযোগিতায় কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজারের লাউতা ইউনিয়নের টিকরপাড়া গ্রামের সিএনজি চালক জসিম উদ্দিন তার মেয়েকে গৃহস্থালির কাজে পাঠিয়েছিলেন মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। সেখানেই স্থানীয় যুবক মাহিন আহমেদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে গর্ভধারণ করে মেয়েটি।
পরবর্তীতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের দুইদিন পর নবজাতকের মৃত্যু হলে দুই পরিবার সম্মতিতে তাকে টিকরপাড়া গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তবে দাফনের পরপরই যুবক মাহিন ও তার পরিবার মা ও শিশুকে অস্বীকার করে। বিষয়টি নিয়ে প্রথমে আপোষের চেষ্টা হলেও শেষমেশ ভুক্তভোগী পরিবার আদালতের শরনাপন্ন হতে হয়। আদালত ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পিতৃত্ব নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন, যার প্রেক্ষিতেই শিশুর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
ভুক্তভোগী নারীর বাবা জসিম উদ্দিন বলেন,
“আমি একজন গরিব সিএনজি চালক। সমাজের চাপে আপোষ করলেও শেষ পর্যন্ত মেয়ের অধিকার আর সম্মান রক্ষা করতেই আদালতের শরনাপন্ন হই। আমার মেয়ের প্রাপ্য সম্মানটুকুই চাই, এর বেশি কিছু নয়।”
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজীব হোসাইন সজীব বলেন,
“আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দুই মাস আগে দাফন হওয়া এক নবজাতকের লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।”
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফউজ্জামান জানান,
“জুড়ী থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলনে আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছি।”