
সিকারি ডেস্ক:: অর্থ সংকটে থমকে আছে সিলেট মহানগরের উন্নয়ন কাজ। বিভিন্ন প্রকল্প বাতিল হয়ে যাওয়ায় অনেক কাজ পড়ে আছে অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায়। আর যেসব কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে সেগুলোরও বিল যথাসময়ে পাচ্ছেন না ঠিকাদাররা। নগরভবনের কাছে ঠিকাদারদের পাওনা ৫০ কোটি টাকা।
অভিযোগ আছে বিগত মেয় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর আমলে সংবর্ধনার নামে খালি করা হয়েছে সিসিকের ফান্ড। বকেয়া বিলের জন্য ঠিকাদাররা চাপ দিলেও সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) চেয়ে আছে মন্ত্রণালয়ের দিকে।
সিলেট মহানগরের ড্রেন, ছড়া-খাল সংস্কার, রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ ও সড়ক মেরামতসহ বিভিন্ন উন্নয়নে ২ হাজার কোটির বেশি টাকার প্রকল্প চলমান ছিল। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর চলমান কাজ পড়ে যায় অনিশ্চয়তায়। ২০২৪ সালে সেপ্টেম্বর মাসে জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহিত প্রকল্পগুলো অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় উল্লেখ স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। এমন আর্থিক টানাটানির সময় বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডের জন্য নতুন অর্থ বছরে ১৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল সিসিক। সময়মতো দরপত্র আহ্বান করতে না পারায় বরাদ্দকৃত ৬০ কোটি টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে সিসিককে।
সিসিক কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি মাছুম ইফতেখার রসুল শিহাব জানান, নগরজুড়ে কয়েকশ কোটি টাকার কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের বিভিন্ন কাজে ঠিকাদারদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। করপোরেশনের তহবিলে টাকা না থাকায় এই বিল পরিশোধ সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আগের টাকা না পাওয়ায় ওই প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজও কোন ঠিকাদার করছেন না। তবে শীঘ্রই এসব টাকা পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন সময় সিলেট সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানসহ অনেককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে সংবর্ধনার নামে সিসিকের তহবিল খালি করায় এমন অবস্থা হয়েছে।
সিসিকের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনে এমন অর্থ সংকট আগে ছিল না। ক্ষমতা ছাড়ার সময়ও সিসিকের ফান্ডে টাকা ছিল। বিগত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর আমলে সংবর্ধনার নামে খালি করা হয়েছে সিসিকের ফান্ড। এছাড়া ৫ আগস্টের পর সিসিকে টেক্স তোলা হচ্ছে।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় মহানগরের এমন অবস্থা বলে আরিফুল হক জানান, চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আগামী বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তির শিকার হবেন।
সিসিক প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, সিটি করপোরেশনের তহবিলে টাকা না থাকায় বকেয়া বিল পরিশোধ সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম। বাতিল হওয়া প্রকল্পগুলো রিভাইস করে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পুণরায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুন বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
এমন অবস্থায় আসছে বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীর ভোগান্তি সিটি করপোরেশনের তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।