
নিজস্ব প্রতিবেদক:: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জনগণের সম্পদ পাথর যারা বেআইনিভাবে উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শনিবার (তারিখ যুক্ত করুন) বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি আরও বলেন, “পুলিশ ও জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করবে।”
তিনি জানান, দেশে ব্যবহৃত পাথরের মাত্র ৬ শতাংশ আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। অথচ এই সামান্য চাহিদা মেটাতে অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। সরকার পাথর কোয়ারি থেকে যে রাজস্ব পায়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক চলাচলের ফলে।
এর আগে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষা, বন সংরক্ষণ এবং নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “সিলেটের অনন্য প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।” তিনি নদী-হাওর সংরক্ষণ, বালুর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, পাহাড় ও টিলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও তথ্য বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় তিনি সরকারি দপ্তরে সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক বন্ধ, পাহাড়-টিলা কাটার বিরুদ্ধে সাইনবোর্ড স্থাপন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম জোরদার এবং আকাশমণি গাছ কেটে স্থানীয় প্রজাতির গাছ রোপণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার তাগিদ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, “যেসব কৃষিজমি পতিত পড়ে আছে, সেগুলোকে আবাদযোগ্য করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।”
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির এবং পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার।
সভা শেষে উপদেষ্টা দল জাফলংয়ের বিভিন্ন এলাকা নৌপথে পরিদর্শন করেন এবং ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। তাঁরা জাফলং স্টোন মিউজিয়াম এবং হরিপুর রেস্ট হাউজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।