
নিজস্ব প্রতিবেদক:: ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুজাম্মিল হুসাইন সাইমনের মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর এলাকায় মানববন্ধন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মুমিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মুজাম্মিল হুসাইন শাবিপ্রবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, সাইমন ঢাকার একটি ওয়েব ডিজাইন প্রতিষ্ঠানে প্রোগ্রামার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার বাউনিয়া থেকে তাঁর স্ত্রী ও শিশুসন্তানের সামনে সিটিটিসি তাঁকে অপহরণ করে। পরে তাঁকে ব্লগার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাঁকে কখনো আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, কখনো হিযবুত তাহরীর, কখনো শিবিরের কর্মী ট্যাগ দেওয়া হতো।
সাইমনের ভাই আব্দুল্লাহ আল হোসাইন জানান, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তাঁকে গ্রিলে ঝুলিয়ে রাখা হয়, ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়, জয়েন্টে আঘাত করা হয় এবং ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়।
তিনি স্বীকারোক্তিতে সই করতে অস্বীকার করলে তাঁর বাবা ও ভাইকে গুমের হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে তিনি সিটিটিসির লিখিত স্বীকারোক্তিতে সই করতে বাধ্য হন। এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২০২১ সালে আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদার বলেন, ‘আমাদের ’১১-১২ সেশনের সিএসই বিভাগের মেধাবী ছাত্র মোজাম্মিল হুসাইন সাইমন, যিনি আজ দীর্ঘ আট বছর ধরে জেলে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই। শুধু একটি জোরপূর্বক আদায় করা স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে তাঁকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। একজন মানুষকে এমনভাবে বন্দী করে রাখা, তাঁর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো, পরিবারকে গুমের হুমকি দেওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ। আমরা অতি দ্রুত তাঁর মামলার পুনঃ তদন্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, ‘শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে বিভাগে দীর্ঘদিন পেয়েছি। সে অত্যন্ত মেধাবী এবং ভালো প্রোগ্রামার ছিল। তার অপরাধ, সে একজন ভালো প্র্যাকটিসিং মুসলিম। হাসিনার বাহিনী এটা সহ্য করতে পারেনি। তাই তাকে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে বছরের পর বছর ধরে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, এই ঘটনার পুনঃ তদন্ত হোক। জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ।’