• ১৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শ্রীমঙ্গলে টাকার জন্য কলেজ ছাত্র খু ন : গ্রে ফ তা র ২

sylhetcrimereport
প্রকাশিত জুলাই ১৫, ২০২৫
শ্রীমঙ্গলে টাকার জন্য কলেজ ছাত্র খু ন : গ্রে ফ তা র ২

সংগৃহিত

সিকারি ডেক্স:: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কাকিয়াছড়া চা বাগানে কলেজছাত্র ও ওয়াইফাই অপারেটর কর্মী হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন (১৯) হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ।

এ ঘটনায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসঙ্গে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত গামছা, স্কুল ব্যাগ, নিহতের মোবাইল ফোন এবং একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা এবং শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১) মো. কাজল মিয়া (২০), পেশায় টমটম চালক, স্থায়ী ঠিকানা কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ; ২) মো. সিরাজুল ইসলাম (২১), পেশায় বাদাম বিক্রেতা, স্থায়ী ঠিকানা সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া; উভয়েরই বর্তমান ঠিকানা শাহীবাগ আবাসিক এলাকা, শ্রীমঙ্গল। দুজনেই মাদকাসক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহত হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন ছিলেন কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং পাশাপাশি শ্রীমঙ্গলের কালীঘাট রোড এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়াইফাই অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। নিহত হৃদয় অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে বন্ধুর কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকার দেনায় জড়িয়ে পড়েন। এই দেনা এবং আর্থিক বিরোধ থেকেই হত্যাকান্ডের সূত্রপাত হয় বলে গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।

উল্লেখ্য এর আগে, গত ৭ জুলাই সকালে শ্রীমঙ্গলের কালিঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া চা বাগানের ১নম্বর সেকশন এলাকায় একটি গাছের নিচে বেল্ট দিয়ে বাঁধা অবস্থায় হৃদয়ের মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গলায় বেল্ট পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ শনাক্তের পর শ্রীমঙ্গল থানায় অজ্ঞাত আসামিদেও বিরুদ্ধে হত্যা মামলা (মামলা নং-১৪, ধারা ৩০২/২০১/৩৪) দায়ের করা হয়।

মামলার পরপরই মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা ও সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) আনিসুর রহমানের তত্ত¡াবধানে এবং ওসি আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়। শহরের সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।

পরবর্তীতে এসআই অলক বিহারী গুণ ও এসআই মো. মহিবুর রহমানের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত গামছা, স্কুল ব্যাগ, হৃদয়ের মোবাইল এবং মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হৃদয়ের কাছে প্রায় ২২ হাজার টাকা পাওনা ছিল কাজলের। চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ঢাকায় নেওয়া হলেও চাকরি না হওয়া এবং পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চরমে ওঠে। এর জেরে গত ৬ জুলাই রাত ১১টার দিকে কাজল ও সিরাজ হৃদয়কে কাকিয়াছড়া চা বাগানে নিয়ে যায়। রাত আনুমানিক ১১টা ২০ মিনিটের দিকে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে তারা ব্যাগ থেকে গামছা বের করে হৃদয়ের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর প্যান্টের বেল্ট দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখে যেন আত্মহত্যা বলে প্রতীয়মান হয়।

হত্যার পর তারা হৃদয়ের মোবাইল ফোন মাত্র ২৫০ টাকায় বিক্রি করে এবং মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার রাজাপুর গ্রামে।

পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃতদের সোমবার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে