
সিকারি ডেস্ক:: সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, নগরীর ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজে কোনো হকারকে বসতে দেয়া হবে না। মোটরসাইকেল যাতে ব্রিজে উঠতে না পারে সেজন্য ব্রিজের দুই প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিনব্রিজ শুধুই হাঁটাহাঁটির জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। আগামী শনিবার থেকেই কিনব্রিজের দুই প্রবেশমুখ বন্ধ করতে কাজ শুরু হবে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের হলরুমে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এমন কথা জানান।
মতবিনিময় সভায় আলী আমজদের ঘড়িঘরে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, সিলেটের যেক’টি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে আলী আমজদের ঘড়ি অন্যতম। এই ঘড়িঘরে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে আপত্তি ওঠায় ঘড়িঘর থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশপাশে অন্য কোথাও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।
ডিসি সারওয়ার বলেন, চাঁদনীঘাটে সুরমা নদীর তীরে ট্রাক পার্কিং করে রাখা হয়। ফলে এখানে যারা ঘুরতে আসেন তারা দুর্ভোগে পড়েন। এখন থেকে এখানে আর ট্রাক পার্কিং করতে দেওয়া হবে না। আগামী শনিবার থেকেই এই এলাকাকে পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হবে।
নগরীর সড়ক ও ফুটপাত হকারদের দখলে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে হকারদের পুণবার্সনের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। একটি জায়গাও নির্ধারণ করা আছে। এটি আবার কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করবো। ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৩ সালে নির্মিত হয় ১ হাজার ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১৮ ফুট প্রস্থের কিনব্রিজ। এটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ১৯৩৬ সালে। ভারতের আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল কিনের নামেই কিনব্রিজ হিসেবে নামকরণ করা হয়। লোহার দিয়ে লাল ধনুকের মতো বাঁকানো এই সেতুটি পর্যটকদের কাছেও আকর্ষনীয়।
এর আগে ২০১৯ সালে ঐতিহ্যের এই সেতুটিকে সংরক্ষণ করতে এই সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুসারে ওই বছরের ৩১ আগস্ট মধ্যরাতে কিনব্রিজের উভয় প্রবেশপথে লোহার বেষ্টনী লাগিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেতুর সামনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লিখা সাইনবোর্ড টানানো হয়। শুধুমাত্র পথচারীরা সেতুটি ব্যবহার করার সুযোগ পান।
তবে কিনব্রিজ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার পর সেতুন দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাদের যাতায়াত সুবিধার জন্য এ সেতু দিয়ে যান চলাচল অব্যাহত রাখার দাবি জানান। কিছুদিন পর কিনব্রিজের উভয় প্রবেশপথে লাগানো লোহার বেষ্টনী ভেঙে রিকশা চলাচল শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে প্রায় পুরো বেষ্টনীই গায়েব হয়ে যায়।