• ৩০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সিলেটে লু টে সাবাড় পা থ র কোয়ারি

Desk
প্রকাশিত জানুয়ারি ৬, ২০২৫
সিলেটে লু টে সাবাড় পা থ র কোয়ারি

ছবি : সংগৃহীত

পাথরের ভাণ্ডার সিলেটে। দেশের পাথরের চাহিদার বড় যোগানদাতা সিলেটের কোয়ারিগুলো। কিন্তু পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ডের জন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞায় দীর্ঘদিন ধরে এসব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ ছিল। তবে ৫ আগস্টের পর স্থানীয় প্রভাবশালীরা মেতে ওঠেন কোয়ারি থেকে পাথর লুটে। ৫ থেকে ১০ আগস্টের মধ্যেই কেবল জাফলং ও ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে বলে সেসময় জানিয়েছিল প্রশাসন।

আর স্থানীয়দের দাবি বৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও গত পাঁচ মাসে দুই কোয়ারি ও আশপাশ এলাকা থেকে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার পাথর লুটে হয়েছে। লুটের এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন বিএনপি থেকে বহিস্কৃত প্রভাবশালী কয়েক নেতা। পাথর লুটের ঘটনায় ইতোমধ্যে এক নেতার নেতার পদ স্থগিত করেছে দলটি। মামলা হয়েছে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারিগুলোর মধ্যে অন্যতম সিলেটের জাফলং ও ভোলাগঞ্জ। জাফলংয়ে পিয়াইন ও ভোলাগঞ্জে ধলাই নদী থেকে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকার পাথর উত্তোলন হতো। কিন্তু যান্ত্রিকভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে পাথরখেকোরা শুরু করেন পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড। তাদের আগ্রাসনে স্থানীয় কৃষি জমি, পান-সুপারি বাগান, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবীদ সমিতি-বেলার এক রিটের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে যান্ত্রিকভাবে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করেন উচ্চ আদালত। পরে বেলার আরেকটি রিটের প্রেক্ষিতে জাফলংকে ইসিএ ঘোষণা করে সকল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়।

২০২০ সালের ৮ জুন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো নিষিদ্ধ করে পাথর, সিলিকা বালু ও নুড়িপাথর উত্তোলন। আদালত ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর নিষেধাজ্ঞায় গত কয়েক বছর থেকে সিলেটের সবকটি কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ ছিল। এতে জাফলং ও ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায় নদীর উৎসমুখে বিপুল পরিমাণ পাথর জমা হয়। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শিথিলতার সুযোগে পাথর কোয়ারিগুলোতে শুরু হয় লুট। দিনরাত সমানতালে চলে লুটপাট। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ৫ থেকে ১০ আগস্টের মধ্যে জাফলং থেকে ১২০ কোটি টাকা ও ভোলাগঞ্জ থেকে ২০ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।

এদিকে, গত কয়েক মাস থেকে প্রশাসন অভিযান চালালেও থামছে না লুট। প্রতিদিন লুট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু ও পাথর। বৈধভাবে উত্তোলন বন্ধ থাকলেও বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতার (বহিস্কৃত) ছত্রচ্ছায়ায় চলছে এই লুট। ৫ আগস্টের পর পাথর লুটের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পেয়ে কেন্দ্র থেকে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরাণের পদ স্থগিত করা হয়। ও

এই সময় লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সের বিরুদ্ধে। পাথর লুটের ঘটনায় ওই তিন নেতাসহ ১১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। লুটের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সোমবার জাফলংয়ে সংঘর্ষও হয়।

গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমদ জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে টাস্কফোর্স ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অন্তত ১৫ জনকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। প্রায়ই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এরপরও লুটপাট থামানো যাচ্ছে না। লুটের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিএনপি নেতা শাহপরাণ ও স্বপনের লোকজনের মধ্যে সোমবার মারামারি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি।

এস.এ…