
সিকারি ডেস্ক: সিলেট নগরীর তালতলা এলাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী প্রনব ধর (২৯)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার বাসিন্দা প্রনব ধর নগরীর তালতলা এলাকায় (বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশে) ‘জেরন গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তার প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে এবং কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
প্রনব ধর জানান, ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেনের (৫০) নেতৃত্বে ১৩নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য ওয়াহিদুর রহমান অভি (১৯), সারোয়ার মিয়া (২১), নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মাহবুব হোসেন (২০), মহানগর যুবদল নেতা ইঞ্জামামুল হক (৩৫) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৩৫ জন দেশীয় অস্ত্রসহ তার অফিসে প্রবেশ করে। তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং তা না দিলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগী আরও অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা অফিসে থাকা কর্মচারীদের মারধর করে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আসবাবপত্র, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, ল্যাপটপ ভাংচুর করে এবং প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এছাড়া অফিসের ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ ৩০ লাখ টাকা, বিভিন্ন চেকের পাতা, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, পাসপোর্ট ও ভিসা লুট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা অফিসের তিনজন কর্মচারী পারভেজ, মুন্না ও মাছুমকে অপহরণ করে এবং তাদের মুক্তির জন্য চাঁদার টাকা দাবি করে। তারা হুমকি দেয়, চাঁদার টাকা না দিলে অপহৃতদের হত্যা করা হবে।
এদিকে, ঘটনার সংবাদ পেয়ে প্রনব ধর দ্রুত তার ছোট ভাইয়ের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ-২১-৮৩৫৬) নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা গাড়িটি ভাংচুর করে প্রায় ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি করে। প্রাণের ভয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
পরে আহত কর্মচারী সাকিল আহমদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেছেন, থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। যদি আসে, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। দলকে বদনামের হাত থেকে রক্ষা করতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি জিয়াউল হক বলেন, ঘটনার পর দুই পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো গ্রেপ্তার হয়নি, তবে পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করছে।