
সিকারি ডেস্ক:: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে যাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে সহকারী স্টেশন মাস্টার (এএসএম) কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ট্রেনের সময়সূচি জানতে চাওয়া এবং ওয়েটিং রুম খুলে দেওয়ার অনুরোধ করায় তিনি যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়লে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্টেশনে অপেক্ষারত কয়েকজন যাত্রী শৌচাগারের চাবি এবং ট্রেনের সময় জানতে চাইলে দায়িত্বরত সহকারী স্টেশন মাস্টার কামাল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এ সময় তিনি টেলিফোনের রিসিভার ছুড়ে মারেন, যাত্রীদের দিকে তেড়ে আসেন এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। তার এমন আচরণে প্ল্যাটফর্মে থাকা শত শত যাত্রী উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর ফলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুলাউড়া স্টেশনে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা আটকা পড়ে।
খবর পেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনি বিক্ষুব্ধ যাত্রী ও স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তার হস্তক্ষেপে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কুলাউড়ার সোনাপুর এলাকার বাসিন্দা শফিক আহমদ অভিযোগ করে বলেন, সহকারী স্টেশন মাস্টার কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আসছেন। আজকের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ এবং তার বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
কুলাউড়া প্রেসক্লাব সভাপতি আজিজুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। কামাল সাহেবের আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল যেন রেলওয়ে স্টেশন ও ট্রেনগুলো তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই বলেন, আমরা ট্রেনের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে যখনই আন্দোলন করি, কামাল হোসেন আমাদের হুমকি দেন। এতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রোমান আহমেদ বলেন, ঘটনার ভিডিও আমি দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি, শিগগিরই এর একটি সমাধান হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে আমি দ্রুত স্টেশনে আসি এবং যাত্রী ও স্টেশনে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। স্টেশন মাস্টারসহ সবাইকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।