• ১০ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

“স্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির জেরে হ-ত্যা, লা-শ আট খণ্ড”

sylhetcrimereport
প্রকাশিত আগস্ট ১০, ২০২৫
“স্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির জেরে হ-ত্যা, লা-শ আট খণ্ড”

সংগৃহিত

স্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করায় বাসায় বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বাসচালকের সহকারী (হেলপার) অলি মিয়াকে। পরে লাশটি আট খণ্ড করে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করতেই একটি ট্রাভেল ব্যাগে মাথাবিহীন লাশ গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় ফেলে দেন হত্যাকারীরা।

এ হত্যাকাণ্ডের পর গত শুক্রবার রাতেই টঙ্গী পূর্ব থানায় নিহত অলির স্ত্রী শাহানা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে।

শনিবার বিকেলে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী নরসিংদী জেলার করিমপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে আপেল মাহমুদ সাদেক (৪২), তাঁর স্ত্রী শাওন বেগম (৩২) ও সাজ্জাদ হোসেন রনিকে (২৫) চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। রাতেই তাঁদের র‍্যাব কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন গ্রেফতার তিনজন।

রোববার দুপুরে র‍্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‍্যাবের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।

সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, এ হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। গ্রেফতার হওয়া আপেল, রনি ও শাওন আক্তারের সঙ্গে পরিচয় ছিল অলি মিয়ার। অলি প্রায়ই আপেলের বাসায় যাতায়াত করতেন। অলি আপেলের স্ত্রী শাওন আক্তারের চরিত্র নিয়ে কটূক্তি করেন। তা ছাড়া আপেলের ভাগনেকে হত্যার পরিকল্পনা ও গত কয়েক বছর আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রনিকে স্থানীয় লোকজনদের দিয়ে মারধর করান অলি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বুধবার (৬ আগস্ট) ভোররাত সাড়ে ৫টার দিকে আপেল ও রনি কৌশলে অলিকে টঙ্গীর বনমালা এলাকার রেললাইনে নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ট্রেন না আসায় অলিকে নিয়ে বাসায় ফেরেন তাঁরা।

পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিছানায় ফেলে দড়ি ও কোমরে থাকা বেল্ট দিয়ে হাত-পাঁ বেঁধে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে অলিকে হত্যা করেন তাঁরা। পরে হত্যার প্রমাণ লোপাট করতে পরদিন বৃহস্পতিবার বাজার থেকে ছুরি, কালো পলিথিন ও স্কচটেপ কিনে আনেন হত্যাকারীরা। পরে অলির মরদেহটিকে আট খণ্ড করে পলিথিনে পেঁচিয়ে টয়লেটের ভেতর রেখে দেন তাঁরা। আর অলির খণ্ডিত মাথা রাখেন টয়লেটের ফলস ছাদে।

পরদিন শুক্রবার টঙ্গীর বনমালা এলাকা থেকে একটি রিকশাযোগে স্টেশন রোড এলাকায় টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের পাশে খণ্ডিত লাশের ব্যাগটি ফেলে পালিয়ে যান আপেল ও রনি। আর হত্যাকাণ্ডের পুরো বিষয়টি নজরে রাখেন আপেলের স্ত্রী শাওন আক্তার।

র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারের পর তাঁদের কাছে থাকা তিনটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড ও নগদ ১৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

বিকেলে গ্রেফতার ব্যক্তিদের টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হবে।

শুক্রবার সকালে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় ট্রাভেল ব্যাগে অলি মিয়ার লাশের সন্ধান মেলে। তিনি নরসিংদী জেলার করিমপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।