• ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাসপাতালের স্টোরে না থাকা ওষুধ ৬ দিনের ব্যবধানে জ ব্দ

Desk
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫
হাসপাতালের স্টোরে না থাকা ওষুধ ৬ দিনের ব্যবধানে জ ব্দ

ফাইল ছবি

পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানের ছয় দিনের ব্যবধানে ফের দ্বিতীয় দফা অভিযানে স্টোরে না থাকা ওষুধ জব্দ করেছে দুদক। গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী অভিযানে এই ওষুধ জব্দ করা হয়।

দুদক পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওষুধ জব্দ করেন সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীরুল কাদের।

দুদক সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্রয়কৃত ওষুধগুলো শুধু কাগজে-কলমে বুঝে নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করে। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকার ওষুধ ও এমএসআর পণ্য গরমিলের অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোববার ওই গরমিলকৃত ওষুধ ও এমএসআর পণ্য স্টোররুমে নেওয়ার চেষ্টা করে। গোপনে খবর পেয়ে দুদক একটি পিকআপ বোঝাই শতাধিক কার্টনে ২২ প্রকারের ৯৪ হাজার ১৯৯ পিস ওষুধ ও এমএসআর পণ্য জব্দ করে।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ওষুধ ও এমএসআর পণ্য সরবরাহের জন্য সামসুল আরেফিন নামে এক ঠিকাদারের মালিকানাধীন সাউথ বাংলা কর্পোরেশনকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে প্রায় ২ কোটি টাকার কোনো পণ্য সরবরাহ না করলেও কাগজে সেগুলোকে সরবরাহ করা হয়েছে দেখিয়ে ঠিকাদারকে পুরো বিল পরিশোধ করে দেন।

দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে প্রায় ২ কোটি টাকার কোনো পণ্য সরবরাহ না করলেও কাগজে সেগুলোকে সরবরাহ করা হয়েছে দেখিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিল তুলে নেন। ওষুধ প্রাপ্ত না হয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যাভাবে ওষুধ রেজিস্ট্রারে সংযুক্ত করেন এবং বিতরণ দেখান। প্রকৃত পক্ষে ওষুধ আসেনাই। এতে প্রমাণ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে এই দুর্নীতি হয়। এ কারণেই রাতের আঁধারে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ ওষুধ নিয়ে আসেন এবং আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তা জব্দ করেছি।

এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. নিজাম উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়ার পরেও আমাদের মাল বুঝিয়ে দিতে পারেনি। বার বার তাগেদাপত্র দিলেও তারা মাল না দিয়ে আমার ওপর বিলে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন বিধায় আমি স্বাক্ষর করে দিই।

এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন মো. মিজানুর রহমান দায় এড়িয়ে বলেন, এই ওষুধগুলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্রয়কৃত তখন আমি এখানে যোগদান করিনি। আমি তখন এখানে ছিলাম না। তবে ওষুধগুলো আরএমও এবং স্টোর কিপার বুঝে নেন। তারপর থেকে এই ওষুধের সম্পূর্ণ বিষয় আরএমও এবং স্টোর কিপারের স্বাক্ষর ছাড়া নড়চড়ের সুযোগ নাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাউথ বাংলা কর্পোরেশনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে গেলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এস.এ…